নামসর্বস্ব ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে এক হাজার ১০২ কোটি টাকা ঋণ তুলে আত্মসাতের অভিযোগে আলোচিত শিল্পগ্রুপ এস আলমের কর্ণধার মোহাম্মদ সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে দুটি মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একটি মামলায় এস আলমসহ ৩৭ জন ও অপর মামলায় ৩১ জনকে আসামি করা হয়েছে। একটি মামলায় ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে মেসার্স সাফরান ট্রেড ইন্টারন্যাশনানের নামে ৫৪৯ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। আরেক মামলায় একই ব্যাংক থেকে মেসার্স হুদা এন্টারপ্রাইজের নামে ৫৫৩ কোটি টাকা ঋণ তুলে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। দুদক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এজাহারে আরও বলা হয়, ঋণের ক্ষেত্রে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের জুবিলি রোড শাখা থেকে বিনিয়োগসীমার বিপরীতে ২০১২ সালের পরবর্তী বছরগুলোতে ঋণের কোনো টাকা পরিশোধ না করা সত্ত্বেও শাখা কর্তৃক ভুয়া ডকুমেন্ট প্রেরণ করে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগসীমা বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ২০২৩ সালে বিনিয়োগসীমা ১০০ কোটি টাকার বিপরীতে ৪৫০ কোটি টাকা সীমাতিরিক্ত বিতরণ করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় মোট ৫৪৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা বিভিন্ন নামসর্বস্ব হিসাবে সমন্বয়ের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়েছে। এই টাকা বিভিন্ন ডিলের মাধ্যমে সাফরান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের হিসাব থেকে এস আলম গ্রুপ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হিসাবে স্থানান্তর করেছে।
আরেক মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং মেসার্স হুদা এন্টারপ্রাইজ নামক নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারীর সঙ্গে পরস্পর যোগসাজশে ঋণ অনুমোদন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আসামিরা অপরাধমূলক অসদাচরণ ও বিশ্বাস ভঙ্গ করে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। অনুমোদিত বিনিয়োগসীমা (ঋণসীমা) ৪৫ কোটি টাকা থাকলেও সময়ে সময়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত অর্থ ছাড় করে সীমাতিরিক্ত বিনিয়োগ করে মোট ৫৫৩ কোটি ২১ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
এছাড়া ঋণ বিতরণের পর ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের আন্দরকিল্লা শাখা থেকে ইউনিয়ন ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় বিভিন্ন নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ঋণের টাকা স্থানান্তর করা হয়। এরপর ওই টাকা চেক ও ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে এস আলম গ্রুপ সংশ্লিষ্ট দুটি প্রতিষ্ঠানে মোট ১৩০ কোটি টাকা স্থানান্তর করার মাধ্যমে মানি লন্ডারিং অপরাধ সংঘটিত হয়েছে।