চরম ঝুঁকিতে সুলতানা কামাল সেতু; দুর্ঘটনার আশঙ্কা স্থানীয়দের

চরম ঝুঁকিতে সুলতানা কামাল সেতু; দুর্ঘটনার আশঙ্কা স্থানীয়দের

নিজস্ব প্রতিবেদক : April 23, 2025

ঢাকার ডেমরা ও নারায়ণগঞ্জের তারাবোর সংযোগকারী সুলতানা কামাল সেতু এখন চরম ঝুঁকিতে।

সেতুর গুরুত্বপূর্ণ অংশের কয়েকটি এক্সপানশন জয়েন্টের রাবার পুরোপুরি উঠে গেছে, এছাড়া জয়েন্ট ধরে রাখার চাপযুক্ত কংক্রিট ঢালাই নষ্ট হয়ে পাথর-ইট-বালু বের হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে জয়েন্টের মাঝখানে সম্প্রসারণ যুগ্ম ফাঁক ও পাশে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, যা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। ভারী যানবাহন চলাচলের সময় দোলে ওঠে সেতু। রেলিং ফেটে পড়েছে বহু আগেই, আর রাতে অন্ধকারে পথচারীরা পড়ছেন চরম বিপাকে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

২০০৬ সালে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) এর তত্ত্বাবধানে সেতুটি নির্মাণের কাজ শুরু হয় এবং শেষ হয় ২০১০ সালের মাঝামাঝি সময়ে। প্রায় ১,০৭২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ মিটার প্রস্থ বিশিষ্ট সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয় ৭৯.৮৮ কোটি টাকা। ২০১০ সালের জুন মাসে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন।

সেতুটি নির্মাণের মূল উদ্দেশ্য ছিল রাজধানী ঢাকার ডেমরা এলাকার সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ জেলার তারাবোর দ্রুত সড়ক যোগাযোগ নিশ্চিত করা। তবে দেড় দশক না পেরোতেই সেতুটি এখন রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে উঠছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, এই ঝুঁকি নিয়েই সেতু দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে ছোট-বড় কয়েক হাজার যানবাহন। পায়ে হেঁটে চলাচল করছে পথচারীরা। সেতুটির উপর অংশে গিয়ে দেখা যায় যানবাহন চলাচল এর সময় ভাংগা অংশটি সজোরে কেঁপে উঠে। অনেক স্থানে ফাটল ও দেখা গিয়েছে। 

ট্রাকচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই সেতু পাড় হই। রাবার উঠে যাওয়ার কারণে ট্রাকের টায়ার পিছলে যায়, ব্রেক ঠিক মতো কাজ করে না‌।

নিয়মিত সেতু দিয়ে চলাচলকারী গার্মেন্টস কর্মী রাবেয়া সহ কয়েকজন বলেন, ফুটপাতের অনেক অংশ ভেঙ্গে গেছে। যখন ভারী যানবাহন চলাচল করে তখন ভাংগা অংশ গুলো কেঁপে উঠে। রাতে চলাচল করতে আমাদের ভয় লাগে কারন জানতে চাইলে বলেন ব্রীজের বেশীরভাগ লাইট জ্বলে না। 

স্থানীয় বাসিন্দা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, সোডিয়াম বাতি না জ্বলার কারনে প্রায়ই ছিনতাই ও ডাকাতির মতো ঘটনা ঘটে। গত কয়েকদিন আগেও এক মহিলার ব্যাগ ছিনতাই করে দুই মোটরসাইকেল আরোহী পালিয়ে যায়।

স্থানীয় আরেক বাসিন্দা মোতালেব শিকদার বলেন, রাতে সেতুর সোডিয়াম বাতি জ্বলে না। অন্ধকারে ঝুঁকি নিয়ে আমরা পথচারী ও যানবাহন পারাপার হই। এবং এই সেতু দিয়ে গাড়ি চলাচলের সময় এমন ভাবে কম্পন হয় যেনো ব্রীজ এখনই ভেঙে পড়বে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে গুরুত্বপূর্ণ সেতুরটির আজ এই বেহাল দশা। দ্রুত সংস্কার করা জরুরী। তা না হলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

এই বিষয়ে জানতে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসানসহ একাধিক কর্মকর্তার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাদের কোনো সাড়া পাওয়া যায় নি।

Share This